নড়াইলের লোহাগড়া থানার পুলিশের দু’জন এএসআইকে মারপিট করে বুলেট সহ পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত । ঘটনার পর পরই নড়াইলের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় দু জন মহিলাকে আটক করেছিল পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসি সুত্রে জানা যায় উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমড়ি গ্রামের পূর্ব পাড়ার ওহিদ সরদার সমর্থিত লোকজনদের সাথে পার্শ্ববর্তী মাউলি গ্রামের রোকনউদ্দিন মোল্যা সমর্থিত লোকজন দের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছিল।

এর ই জের ধরে গত২২ এপ্রিল ২০২১তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার ১১টা ৩০ মিনিটের সময় ওহিদ সরদার সমর্থিত বুলু সরদার (৫৫)কে প্রতিপক্ষ রোকনউদ্দিন মোল্যা সমর্থিত লোকজন অবরুদ্ধ করে রাখে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদ্বন্দ্বি দুটি পক্ষ টিকেরডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের দুই পাশে দুই গ্রুপ সংঘাতের প্রস্তুতি নেয়। এবং এই খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ এএসআই মীর আলমগীর ও এএস আই মিকাইল হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য বেধড়ক লাঠিচার্জ করেন।

পুলিশের লাঠিচার্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ সরদার (৭৫) ও সনি সরদারসহ ৪/৫জন কমবেশি আহত হয়। এরপর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসি ওই দু’জন পুলিশ কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়ে তাদেরকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এএসআই মীর আলমগীরের কাছে থাকা চীনের তৈরি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু (৭.৬২) মি:মি: পিস্তল ও ৮ রাইন্ড বুলেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

গুরুতর আহত ওই দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

খবর পেয়ে নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিলা সিদ্দিকা, লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি) সহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রায় ৩ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে বেলা ২ টা ৩০ মিনিটের সময় পার্শ্ববর্তী মাউলি এলাকার একটি পাকা সড়কের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় অস্ত্র ও বুলেট উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সৃষ্ট ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে জাহানারা বেগম (৫৫) ও সোহানা রোজি (৩২) কে আটক করা হয় । এবং লোহাগড়া থানা পুলিশ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

গত ১ মে ২০২১ তারিখ ভোর ৪ টার সময় কোটাকোল ইউনিয়ন থেকে ঐ মামলার অন্যতম আসামি সানি সরদার( ২৭)কে নড়াইলের ডিবি এএস আই মাহফুজুর রহমান টিম ও লোহাগড়া থানা ইন্সপেক্টর তদন্ত মাহমুদুর রহমান টিম যৌথ অভিযান চালিয়ে আটক করতে সক্ষম হন। এবং ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।